top of page

আয়না (বনশ্রী ভট্টাচার্য)

-হ্যালো, কে বলছেন?

-এতক্ষনে ফোনটা তুললে! সকাল থেকে কতবার কল করেছি।

-শুনুন, আমি অচেনা নম্বরের ফোন সহজে ধরতে চাইনা।

-ওরকম ভাবে বোলোনা, আমাদের তো কত অল্প বয়সের পরিচয়।

-কী যে বলেন, আচ্ছা নামটা বলুন, তাহলে হয়তো চিনতে পারবো।

-বলবো, বলবো, এত তাড়া কিসের! আরও কিছুক্ষন না হয় দুজনে একটু মনের কথা বলি, তারপর না হয় -

-অদ্ভুত মানুষ তো আপনি, আচ্ছা এত সাহস কি করে পেলেন বলুন তো!

-আরে অত রেগে যাবার কি আছে

-পরিচয় টা দিন প্লিজ, না হলে -

-না না, ফোন টা দয়া করে কেটে দিওনা

-আপনার আস্পর্ধা দেখে তো অবাক হয়ে যাচ্ছি।

-একটু মনে করার চেষ্টা করো। আগে তো আমাকে ছাড়া চলতোই না তোমার। কোনো কাজ করার আগে আমাকেই জিজ্ঞেস করতে। আমাদের আনন্দ, আমাদের দুঃখ সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতো। মন খারাপ হলে আমরা সেই সাঁকোর কাছে চলে যেতাম। তুমি পা ডুবিয়ে বসতে, জলের ছোঁওয়ায় তোমার পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিতো, তুমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে দিতে। আমি বলতাম ভয় নেই, তুমি আশ্বস্ত হতে

-কি যা তা বলছেন,আপনার ধৃষ্টতা দেখে মনে হচ্ছে -,আচ্ছা আমার ফোন নম্বর টা কোথায় পেলেন বলুন তো!

-ওই যে বললাম, ছোটোবেলার পরিচয়, জোগাড় করতে অসুবিধে হয়নি।

-রাখুন তো, এবার আমার মেয়ে বাড়ি ফিরবে।

-ওই এক দোষ তোমাদের! সংসার, সন্তান, পরিবার। নিজের কথাও তো একটু ভাবতে হয়। নিজেকে একটু যত্ন করো, আগে তো দেখেছি গালে একটা ব্রণ হলেও ঘুম হোতো না-

-শুনুন, আমি না নিজেকে নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। আমার আজকের দুপুরটাই মাটি করে দিলেন।

-ও ভাবে বোলো না, পুরোনো মনের মানুষকে মেয়ের সামনে প্রকাশ করতে চাওনা, ভয় না লজ্জা!

-আপনি কিন্তু এখনও নামটা বললেন না

-আয়নার সামনে দাঁড়াও, আমাকে দেখতে পাবে। নামটা ও জানতে পারবে।

-মানে ভারী অদ্ভুত মানুষ তো আপনি, হেঁয়ালী করে কথা বলছেন তখন থেকে।

-আরে দাঁড়াওনা একবার আয়নার সামনে।

-দাঁড়ালাম, এবার বলবেন কি?

-এখনও বুঝলেনা! আমি তোমার মনের মধ্যেই ছিলাম, এখনও আছি, আর পরেও থাকবো, সবসময় তোমার সাথে থাকতে চাই। কখনও প্রয়োজন পড়লে আমার পরামর্শ নিও।




Comments


bottom of page